নববর্ষের বাণী

 

 

 

দুঃখ দৈন কাটিয়া যাউক, শোক তাপ মুছিয়া যাউক, আত্মপ্রেম বিশ্বপ্রেমের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত হউক, বিশ্বপ্রেম কল্পনার কুহেলীমাএ না থাকিয়া জীবনের কর্ম্মে বা বাস্তবের নবরূপায়ন লাভ করুক| তোমাদের প্রতিজনের জীবন বিশ্ব-মানবের জীবন হউক| প্রতিদানে তোমরা বিশ্বের প্রতি জীবের প্রতিনিধি রূপে সকলের হিত চিন্তা করিয়া সকলের কূশল সাধিয়া অভ্রান্ত পদবিক্ষেপে ভূমণ্ডলে বিচরণ কর|

 

দুঃখ-দারিদ্র্য দেখিয়া ভয় পাইও না| দারিদ্র্যের সহিত সংগ্রাম করিতে গিয়া নিজ মনুষ্যত্বের প্রকৃত পরিচয় দিবার সুযোগ যতবার পাইয়াছ, দায়-দায়িত্ব-পরোয়াহীন ঐশ্বর্যের হৈম পালঙ্কে শয়ন করিয়া তাহা পাইতে না| এই জন্যই ধনীর গৃহে সররাচর অধিকাংশ অপদার্থেরা জন্ম নেয়| নিজের দারিদ্র্যকে বিদ্বেষের চক্ষে দেখিও না| দারিদ্র্যেরই চীরদুঃখহর দাক্ষিণ্যে তোমার ভিতরের দেবতা দিনের পর দিন পৌরুষের প্রচণ্ড প্রভায় স্পষ্টতর ও উজ্জলতর মুর্ত্তিতে আবির্ভূত হইতেছেন| দারিদ্রকে সন্মান কর, দুঃখকে পূজা কর, ক্লেশ-কষ্ট-অপমানকে শ্রদ্ধা করিতে শিখ| ভগবানই তোমাকে বলশালী করিবার জন্য এই সব অবাঞ্ছিত রূপ ধারণ করিয়া আসিয়াছেন ও আসিতছেন|

 

তোমাদের যে শক্ত্তি কত, তাহা তোমরা জান না| তাই অত আত্ম-অবিশ্বাস| যদি শুধু অনুশীলন কর, তাহা হইলে তোমাদের একটি ক্ষীণতম ইচ্ছার দ্বারা জগৎ. ব্রহ্মাণ্ডে অভাবনীয় কাণ্ড তোমরা ঘটাইয়া দিতে পার| সাত্ত্বিক রুচী লইয়া আত্মশক্ত্তির বিকাশে যত্নবান হও|

 

বিশ্বাসী আমৃত্যু নিজ লক্ষে লাগিয়া থাকে| অবিশ্বাসী বারংবার দিক পরিবর্ত্তন করে| বিশ্বাসের বলে ভাঙ্গা নৌকাতেই তুমি উত্তাল-তরঙ্গ-সঙ্কুল মহাসমুদ্র অবহেলে পার হইয়া যাইবে| বিশ্বাস ছাড়িও না|

 

শত্রুমিত্র সকলেরে জানিয়া আপন,

সকলের হিত কর্ম্মে সঁপ তনু মন|

 

 

 

 

                                                                                                                          পরের পাতা